সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি॥ তাস খেলতে বাধা দেওয়ায় ঝালকাঠির শ্রমিক আলিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নালার পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার আসামীরা জামিনে এসে বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপসৃষ্টি ও খুন-জখমের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় মামলার বাদী মাকসুদা বেগম গত ১১ অক্টোবর ঝালকাঠি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। জানা গেছে, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠী এলাকার আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে আলিম(১৮)সহ ১০ শ্রমিক শেখেরহাট ইউনিয়নের রাজপাশা সড়কে নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ছিল। কাজ শেষে শ্রমিকরা ওই এলাকায় তাদের থাকার ঘরে রাতে ঘুমাতে যায়। ২০ জুন রাতে শ্রমিকদের তাস খেলার কারনে আলিমের ঘুমের সমস্যা হওয়ায় সকলকে তাস খেলতে নিষেধ করে। এতে অন্য শ্রমিক ঝালকাঠির কৃষ্ণ কাঠী এলাকার বাচ্চু খলিফা(৩২),নয়ন ব্যাপারী ওরফে আকবর(২২),মাসুম হোসেন হাওলাদার(২০),খালেক হাওলাদার(৭০), রাজন(১৮),মোতালেব (৫৫),মোফাজ্জেল(৫৭) ও নলছিটি উপজেলার তৌকাঠী এলাকার রাজিব খান(২৫) কথাকাটাকাটির এক পর্যায় আলিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর আলিমের লাশ রাজপাশা গ্রামের সোনাপুর এলাকার একটি নালার মধ্যে ফেলে দেয়।
পরদিন ওই এলাকার লোকজন নালার মধ্যে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশ কে খবর দিলে লাশ উদ্বার করে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত আলিমের মা মাকসুদা বেগম বাদী হয়ে ৮জনকে আসামী করে গত ২২ জুন ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-২৬। নিহত আলীমের লাশ উদ্বারের পাশাপাশি পুলিশ ৮ আসামীর সবাইকে আটক করে। আসামীরা দুই দফায় গত ৫অক্টোবর জামিনে মুক্ত হয়। এরপর আসামীরা গত ৫/১০/১৯ তারিখ রাত ৯টার দিকে মামলার বাদী মাকসুদা বেগমকে পথরোধ করে মামলা তুলে নিতে নির্দেশদেয়। মামলা তুলে না নেয়া হলে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন-জখমের ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়।
এদিকে গত ২২ জুন হত্যা মামলা দায়ের হলে তদন্তের ভার দেয়া হয় এসআই আ: মালেকের উপর। কিন্তু অদ্যাবধি মামলার তেমন অগ্রগতি হয়নি। বরং হত্যা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আ: মালেককে মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বলেন, তিনি বদলী হওয়ায় গত ১৫/৯/১৯ তারিখ মামলাটি ঝালকাঠি সদর থানার ওসিকে বুজিয়ে দিয়েছেন। মামলার অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু তাহেরকে ফোন দেয়া হলে তিনি জানান, মামলাটি তার কাছে রয়েছে, শীঘ্রই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমোদন সাপেক্ষে তদন্তভার ইন্সপেক্টর মুরাদের উপর অর্পন করা হবে। মামলার বাদীর মেয়ে রীমা জানিেেয়ছেন, তিনি এই হত্যা মামলার তথ্য জানতে থানায় গেলে পুলিশ তার সাথে দুর্বব্যবহার করে কোন সহযোগিতা করে না। এছাড়াও এই হত্যাকান্ডটিকে ষ্টক করে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। মামলার বাদী ও পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
Leave a Reply